Description
এই যে সে দাঁড়িয়ে আছে নুন্সী নামের অদ্ভূত এই স্টেশনটায়, ওভারব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে দেখছে কয়েক হাত দূরের বাটার ব্রিজ, সেই দাঁড়িয়ে থাকার মধ্যেই কতগুলো জীবন ঝরে যাচ্ছে যেন! ছোটোবেলায় টকাটক টিকটক ছবি ঘোরানো প্লাস্টিকের খেলনা বায়োস্কোপের ভিতরের ছবির মতো ফিরে আসছে সাদা কালো কেমন। দেখতে পাচ্ছে দেশভাগের পরেই পূর্ববঙ্গ থেকে এপার বাংলায় চলে আসা ঠাকুরদা কিংবা নদী পেরিয়ে ওপারের উলুবেড়ে থেকে দাদামশায়ের কাজ করতে চলে আসা এখানে এই বাটা কোম্পানিতেই। সকালবেলা বাঁশি পড়ল ওই। আর ভিটেমাটি ছেনে ভিনদেশে আসা দু’জন মানুষ চলেছেন একই জায়গায় কাজে। ওই যে বাজানো বাটার ভোঁ- টা, এই যে বাটা কোম্পানির গেটের ওপরেই লম্বা দাঁড়িয়ে থাকা বিল্ডিংয়ের মাথার দেয়ালে লাগানো বিশাল গোল ঘড়িটা – সেইসব সারানো বা দেখভালের কাজ তো মামাবাড়ির দাদুর কাধের ঝোলায় স্ক্রু ড্রাইভারের মতো যন্ত্রপাতি সবসময়। ঠাকুরদা চামড়া শ্রমিক। দুজনেরই একান্ত চেষ্টা, ভিনদেশে গুছিয়ে নেওয়া দুটো পরিবার। এবং নক্ষত্রের যোগে তখনই লেখা হয়ে যাচ্ছে আপাত সাধারণ একটা নিয়তি। লেখা হয়ে যাচ্ছে দুটো। ছেলেমেয়ের প্রেম। আর সেটা না হলে এই এতদিন পরে কেই বা মরচে রং শ্যাওলায় হাত রেখে রেখে গল্প খোঁজার সঙ্গে সঙ্গে সদ্য হারানো মাকেও খুঁজে যেত একনাগাড়ে ?