Description
এই তো কটা দিন আগের কথা। অথচ এর মধ্যেই মনে হয় অন্য এক জন্ম। তখনও করোনাকে কেউ চোখে দেখিনি। জিনিসটা বাঘ, সিংহ, নাকি দাড়িওয়ালা রাম ছাগল- কিচ্ছু বুঝতে পারছিলাম না। শুধু শুনছিলাম, প্যান্ডেমিক, লকডাউন, কোয়ারান্টাইন এই সব কমিউনিটি মেডিসিনের একাডেমিক শব্দ। তাল মেলাতে পারছিলাম না। নিত্য নতুন চমক। আজ জনতা কারফিউ তো কাল থেকে পুরোপুরি লকডাউন। আজ স্বাস্থ্যকর্মীদের ঘণ্টা বাজিয়ে সংবর্ধনা, হেলিকাপ্টার থেকে পুষ্পবৃষ্টি তো কাল গালি দিয়ে পাড়া ছাড়া করা। অত্যন্ত জরুরী কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরোনো যাবে না। আর আমি ঢাল-তলোয়ারহীন নিধিরাম সর্দার সব কিছুর দর্শক হয়ে গেলাম। অনেক কষ্টে জোগাড় করলাম একটা এন৯৫ মাস্ক, এক বোতল স্পিরিট। আমার বিশ্বস্ত বাহনে চেপে খুপরিতে ঘুরে ঘুরে রোগী দেখতে থাকলাম। রোগী কম থাকায় হাতে বেশ সময় থাকছিল। লিখতে শুরু করলাম রোজনামচা। আমি গল্পওয়ালা। সব ঘটনাতেই গল্প খুঁজে বেড়াই। জ্ঞানগর্ভ প্রবন্ধ লিখতে বললে ঘাবড়ে যাই। তাই রোজনামচায় কোনো জ্ঞানের কথা ছিলো না। ছিলো যা প্রতিদিন দেখছি সেই সব গল্প। রোগীদের গল্প। সেইসব ছাই পাঁশ লেখা বড় যত্নে একত্রিত করে গুরুচন্ডা৯ বের করেছে, ‘করোনার দিনগুলি’। এই বইয়ের কোনো সাহিত্য মূল্য নেই। কোনো মহৎ উদ্দেশ্য নেই। বই পড়ে জ্ঞানবৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। আছে শুধু লকডাউন এবং আমফান পরবর্তী সময়ে কয়েকটি মানুষের জীবনের সুখ দুঃখের গল্প আর এক খুপরিজীবি চিকিৎসকের ঘ্যান ঘ্যান।