Sadhur Heshel

বুক রিভিউ : সাধুর হেঁশেল

লিখলেন কামরুল হাসান

মান্দাস প্রকাশিত সোমব্রত সরকারের ‘সাধুর হেঁশেল’ বইটির আলোচনা করলেন কামরুল হাসান। তাঁকে আমাদের পক্ষ থেকে অনেক ধন্যবাদ জানাই।

‘পুজো পার্বণে দেবতার ভোগ হয় ঋতুকালীন দ্রব্যাদিতে। আমের মোরব্বা, তেঁতুলের সরবত, দুধমানের পাতা বাটা, শুক্তো, ঘন্ট রান্না হয় মহাপ্রভুর ভোগে। বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর বাড়িতে হয় বেগুন পাতুরি, ছানার রসা, ধোকার ডালনা, রসগোল্লার চাটনি।

সাধুরা খাবার খান না, সেবা নেন প্রকৃতিজাত বস্তু ও প্রাণময়তা থেকে। এতে দীর্ঘ আয়ু ও লাবণ্যময় দেহের অধিকারী হন তাঁরা। সাধু বলেন, ‘প্রত্যেক প্রাকৃতিক খাদ্যের ভেতর রয়েছে গুণাগুন। আরোপিত নয় এমন খাদ্যখাবার খেলে শরীরে জরা নামে, শুক্রকণা তরল হয়। শুক্রকণা ঠিক না থাকলে মানসিক অস্থিরতা থাকে। অস্থিরতা, উদ্বিগ্নতা, তাড়াহুড়ো, চঞ্চলতা এসব শরীরে থাকলে সাধনা হবে না। সঠিক খাদ্যখাবার শরীরকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে।’

সাধুর হেঁশেল | সোমব্রত সরকার

এ বইতে ধরা রয়েছে চর্যাপদ থেকে শুরু করে মঙ্গলকাব্য হয়ে চৈতন্যযুগ পেরিয়ে হাল আমলেরও সাধুসন্ত, যোগিপুরুষদের খাবার দাবার, রান্নার প্রণালী, পথ্যাপথ্য, ওষুধি নিয়ে আবহমান বাংলার লৌকিক পরম্পরা বাহিত এক অভিনব আখ্যান। সাধক, সাধনসঙ্গিনীদের সঙ্গে একত্র আখড়াবাসের কথিকা।

সাধুর আখড়ায় খাওয়া মানে হল সেবা। তাঁরা সব বলেন, দেহটাকে সন্তুষ্ট রাখতে আমরা খাবার খাই, শুধুমাত্র রুচির জন্য খাই না। খাদ্য হল দেহের ঔষধ।

যে দেশে তুমি জন্মাবে তোমার দেহ ও মনের রোগ দূর করতে সে দেশেই বৃক্ষ, লতা, গুল্ম জন্মাবে।’

সাধুর হেঁশেল
আহার্য ও সাধনা
সোমব্রত সরকার

প্রথম প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ২০২৩

প্রচ্ছদ ও অলংকরণ : শুভেন্দু সরকার

Related Posts