Description
কাহিনির সুত্রপাত একাদশ শতাব্দীতে… মহারাজ প্রথম মহীপালদেব তখন বঙ্গের সিংহাসনে আসীন। এই সময় বাংলায় মন্ত্রযান, বজ্রযান ও সহজযান বিপুল ভাবে প্রভাব বিস্তার করছে। সংসারত্যাগী সন্ন্যাসী, রাজা-মহারাজা, উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারীরাও কায়াভিত্তিক রহস্যময় তন্ত্রসাধনায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন। শুধুমাত্র তন্ত্র বা মন্ত্রের প্রভাব নয়, অপরসায়ন বিদ্যা, চিকিৎসা বিদ্যা ও জাদুবিদ্যা চর্চার বিবিধ দিকও উন্মোচিত হচ্ছে। বজ্রযানী সাধকদের অনেকেই চিকিৎসাশাস্ত্র ও জাদুবিদ্যায় পারদর্শী। দিকপাল অপরসায়নবিদ নাগার্জুনের মৃত্যুর কিছু দিন পরে, গজনীর সুলতান মামুদ মুহূর্মুহূ ভারত আক্রমণ শুরু করেন। লুন্ঠন ও আক্রমণে উত্তর ভারত ক্রমশ বিপর্যস্ত… ঠিক সেই সময়ে অন্ধকারে আলোকরেখার মতো ভারতে পদার্পণ করেন আল বিরুনি। শুরু হয় এক অপূর্ব মাধুকরী। ভারবর্ষের আনাচে-কানাচে জ্ঞান অন্বেষণে ব্রতী হলেন তিনি। প্রয়াত নাগার্জুনের শিষ্যদল তখনও চর্চা করে চলেছে কিমিয়াবিদ্যা। অন্য দিকে, পূর্বভারতকে কেন্দ্র করে বয়ে চলেছে বজ্রযানী কায়াসাধনার অদ্ভুত স্রোত… এই আশ্চর্য সময়ের প্রেক্ষিতে হাত ধরাধরি করে হাঁটে দুই তিনটি গল্প। মহারাজ প্রথম মহীপালদেব ও শ্রেষ্ঠী কন্যা লীলাবতীর প্রেমকাহিনি প্রথম গল্পের পটভূমি রচনা করে। দ্বিতীয় গল্পের নায়ক-নায়িকা হয়ে ওঠেন নামগোত্রহীন অতি সাধারণ দুই নর-নারী। তৃতীয় গল্পের মাঝে আসেন বজ্রযানী সাধক কঙ্কণপাদ ও তাঁর সাধনসঙ্গিনী। এই তিনটি আখ্যানকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে একটি রূপকথার মতো উপন্যাস। রূপকথা, কারণ এ গল্পে ইচ্ছেপূরণ হয়, নর-নারীর কাঙ্ক্ষিত মিলন ঘটে আর নটেগাছটি যথাসময়ে মুড়োয়।